গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আগারগাঁওস্থ কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান, এমপি। পাশাপাশি উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল(অবঃ) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান, মহাপরিচালক বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী, এনবিপি, এনডিইউ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি উপস্থিত ছিলেন । এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সামরিক ও অসামরিক অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর নবনির্মিত স্টেশন লক্ষীপুর এর ০২ টি ভবন ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর কর্মকর্তা, নাবিক এবং অসামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বীরত্ব ও সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পদক ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক প্রদান করা হবে এবং মহাপরিচালক বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড কর্তৃক প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড পদক ও প্রেসিডেন্ট কোস্ট গার্ড (সেবা) পদক প্রদান করা হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে নিম্নবর্ণিত কোস্ট গার্ড সদস্যবৃন্দ বিভিন্ন শাখায় পদক লাভ করেছেন। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বর্তমানে দেশের বিশাল সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। দেশের সমুদ্রসীমা ও উপকূলীয় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, জনগণের জানমাল রক্ষা, চোরাচালান, মাদক ও মানব পাচার দমনের পাশাপাশি নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও সহায়তা প্রদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড মানুষের মাঝে নিরাপত্তা ও আস্থার বিশ্বস্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও কোস্ট গার্ডের নিরলস প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর ঝুঁকিপূর্ণ বন্দরের তালিকা থেকে বের হয়ে একটি নিরাপদ বন্দরে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড জন্মলগ্ন থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার ২৮৯ কোটি টাকার অধিক মূল্যমানের অবৈধ দ্রব্যসামগ্রী আটক করেছে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এর দায়িত্বাধীন এলাকায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। মায়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাসহ ছোট বড় অনেক বোট ও জলযান মায়ানমার ফেরত/ হস্তান্তর করা হয়েছে। বিগত ২০১৭ সাল হতে অদ্যাবধি ১৬,৩৭৮ জন মিয়ানমার নাগরিককে (বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত) মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো/ হস্তান্তর করা হয় এবং ৮৫ জন দালালকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর ও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৫২টি মৃতদেহ উদ্ধারকরত থানায় হস্তান্তর করা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড অপারেশনাল কর্মকান্ড পরিচালনার পাশাপাশি দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় গরীব-দুঃস্থ জেলে ও প্রান্তিক জনগণের মাঝে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করে থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর তত্বাবধানে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঐকান্তিক সহযোগিতায় বিভিন্ন আধুনিক জাহাজ, ঘাঁটি ও জলযান সংযোজনের মাধ্যমে বর্তমানে এ বাহিনীর সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সময়ের পরিক্রমা ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার নিপুণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে অধিকতর কার্যকর, শক্তিশালী ও সুদক্ষ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে এ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য উজ্জীবিত ও বদ্ধপরিকর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।